এলাকায় আধিপত্য বিস্তার,অনৈতিক উপায়ে সুবিধা হাসিল, মেম্বার পদে ভোট করে প্রতিপ প্রার্থী সেলিমের জনপ্রিয়তার কাছে হেরে যাওয়ায় বিভিন্নভাবে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন রাসেলের বিরুদ্ধে।
হাজিরহাট ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য মো. সেলিমকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে রেশনকার্ড তালিকায় প্রভাবশালীদের অন্তর্ভুক্ত করা, বয়স্ক ও বিধবা ভাতায় অর্থ হাতিয়ে নেয়া, নিজ পরিবারে একাধিক কৃষি কার্ড শুবিধা ভোগ করা, মসজিদকে দেওয়া সরকারি বরাদ্ধের টাকা আত্ব্যসাৎ করা,সংখ্যালঘুদের জমি জবর দখল, ইয়াবা সেবন করার কৌশলী ভিডিও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে তাকে হয়রানি করছে এ শ্রমিকলীগ নেতা রাসেল। এছাড়াও কিছু ভূঁইফোড় অনলাইন নিউজ পোর্টালের নামধারী সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
হাজিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. সেলিম জানান, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শ্রমিকলীগ নেতা মোশারফ হোসেন রাসেলের বাবা মো. ইউছুপসহ তার প্রতিদ্বদ্ধি প্রার্থী হয়েছেন চার জন। ওই ভোটে তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার পর থেকে রাসেল বিভিন্ন ভাবে তাকে হয়রানি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেলিম জানান, শ্রমিকলীগ নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে রাসেল চাঁদাবাজি, নারী কেলেঙ্কারী ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা করছে। তিনি এলাকার জনগনকে সাথে তার এ সব অপকর্মে বাঁধা দেওয়ায় বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র কওে হয়রানি করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি জানান, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৭ নং ওয়ার্ড থেকে মেম্বার পদে চারজন প্রার্থী ভোট করেন। এর মধ্যে রাসেলের বাবা ইউসুফ ও প্রার্থী হয়। কিন্তুু জনগনের সাড়া না পেয়ে নিজ প্রার্থীতা প্রত্যাহার করবে বলে তার নিকট ধর্না দেয়। পরে ১ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে উল্টো সেলিমের পে মাঠে ওপেন ভোট করবে বলে ওয়াদা করে রাসেল ও তার বাবা ইউছুফ। কথামত ভোটের আগের দিন রাতে উপজেলা আ’লীগের পার্টি অফিসে রাসেল ও তার বাবা ইউসুফকে এক লাখার চেক বুঝিয়ে দেন তিনি। কিন্তু ভোটের দিন তার বাবা ইউসুফের পে জোরালোভাবে ভোট করে রাসেল। এর পরও বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে মেম্বার নির্বাচিত হয় সেলিম। পরে ভোটে তার তীব্র বিরোধীতা করায় সেলিম মেম্বার চেক ফেরত চাইলে তখন উল্টো টাকা দাবি করে রাসেল ও তার বাবা ইউসুফ। পরে সেলিমের স্বারকৃত চেকের টাকা উত্তোলন করতে না পারায় সেলিমের বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর কোর্টে একটি চেক জালিয়াতির মিথ্যা মামলা দায়ের করে রাসেল। অবশেষে দীর্ঘ শুনানির পর রাসেলকে এক লাখ টাকা ফেরত দিতে রায় দেন আদালত। আর এতেই সেলিমের সাথে রাসেলের বিরোধের শুরু হয়। এ ছাড়াও জনৈক প্রভাবশালী এক নেতার পরিচয় দিয়ে এলাকায় দাঙ্গা হাঙ্গামাসহ ত্রাসের রাজত্ব শুরু করে রাসেল, জনৈক ওই নেতার দাপট দেখিয়ে মেঘনা নদী ইজারা আনার নামে একটি দস্যু সিন্ডিকেট চক্রকে দিয়ে নদীতে চাঁদাবাজি ডাকাতি লুটপাট শুরু করে রাসেল। এ নিয়ে মেঘনা পাড়ে কয়েক দফায় মারপিটের ঘটনাও ঘটে তখনকার সময়।
সেলিম জানান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলি’র ছবি ফেস্টুন ব্যানার রাতের আধারে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় রাসেল। এ ঘটনায় পত্রিকায় এশাধিক সংবাদও প্রকাশিত হয়েছিল। জনৈক মতাধর নেতার সেল্টার না থাকায় এখন গোপনে বিভিন্ন বিষয়ে তার কথার অবাধ্য হলে মানুষকে হয়রানির করার অেপচেষ্টা চালায় সে। সম্প্রতি উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা নিয়ে বিক্রির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। রাসেলের বাবা ইউসুফ নিজেকে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড নেতা দাবী করে মেম্বার সেলিম থেকে নানা প্রকার সুবিধা দাবী করে। অনৈতিক উপায়ে সুবিধা না পেয়ে দুই বাপ ছেলে মিলে সেলিমের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে ।
সেলিম বলেন, জনগনকে সাথে নিয়ে তিনি এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। রাসেল এবং তার বাবা ইউছুপ তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্নিত হয়ে তার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি এ মূহুর্ত্বে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এসব বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য গতকাল বুধবার রাত ৮টার সময় শ্রমিকলীগের কমলনগর উপজেলা সভাপতি মোশারফ হোসেন রাসেলের ব্যবহৃত ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। তিনি পরবর্তীতে বক্তব্য প্রদান করলে তা তুলে ধরা হবে।