ডেস্ক রিপোর্ট: সম্মেলনের প্রায় চার মাস হতে চললেও চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের এখনো কমিটি ঘোষণা হয়নি। এ দিকে কমিটি না থাকায় লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের অন্যতম শাখা চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের রাজনীতি অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট পদপ্রত্যাশীরা।
গত বছরের ২০ অক্টোবর হাজিরপাড়া হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জাঁকজমকপূর্ণভাবে চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের প্রথম বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় জেলা ছাত্রলীগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৫০ মার্কসের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয় পদপ্রত্যাশীদের। যেখানে বাংলাদেশের ইতিহাস, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা যুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও আদর্শ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকান্ড, ছাত্রলীগের ইতিহাস ও আদর্শ এবং সমসাময়িক রাজনীতি সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। এ ছাড়াও ছাত্রলীগের নেতৃত্বে মাদকসেবীদের পদপ্রাপ্তি ঠেকাতে পদপ্রত্যাশী প্রত্যেককেই ডোপ টেস্টের সম্মুখীন হতে হয়েছে।
পদপ্রত্যাশীদের অভিযোগ- কারা নেতা হবেন, তারা কে কার অনুসারী, কোন এলাকার নেতা। এসব হিসাব নিকাশ শেষ হচ্ছে না বর্তমান নেতাদের। তাই কমিটি গঠনে দেরি হচ্ছে। আবার কমিটিতে পদ-পদবি নিয়ে অর্থের লেনদেন হচ্ছে এমন গুঞ্জনও রয়েছে সাংগঠনিক এলাকায়। অন্যদিকে দীর্ঘদিন যাবত কমিটি না থাকায় একদিকে বাড়ছে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সংঘাত, অন্যদিকে ছাত্রলীগের রাজনীতির প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন সাধারণ ছাত্ররা। এতে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব সংকট দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন সাবেক ছাত্রনেতারা।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২ জুন লক্ষ্মীপুর সদর পূর্বাঞ্চলের ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে পৃথকভাবে পুলিশ প্রশাসনের চন্দ্রগঞ্জ থানা অনুমোদন পায় মন্ত্রীসভার প্রশাসনিক পূর্নবিন্যাস কমিটিতে (নিকার)। এরপর সদর উপজেলা ছাত্রলীগ ভেঙে চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগ নামে আলাদা সাংগঠনিক শাখা ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে গত ছয়বছর আহ্বায়ক কমিটি দিয়েই চলেছে চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের রাজনীতি।
সম্মেলনে সভাপতি পদপ্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক কাজী মামুনুর রশিদ বাবলু, যুগ্ম আহ্বায়ক আবু তালেব, যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান হোসাইন তুষার, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মনির হোসেন ফরহাদ এবং দত্তপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী নিজাম।
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রিয়াজ হোসেন জয়, যুগ্ম আহ্বায়ক মাকছুদুল হাসান রোমান, হাজিরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান সৌরভ।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তৃণমূলের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী একাধিক নেতার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, মাদক ও কিশোর গ্যাং গঠনের অভিযোগ রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শাহাদাত হোসেন শরীফ বলেন, পদপ্রত্যাশী সবপ্রার্থীর বায়োডাটা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, একেকজনের পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতার সুপারিশ থাকায় বিষয়টি সমাধানের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতারা আমাদেরকে সিদ্ধান্ত জানাবেন। যার কারণে কমিটি ঘোষণা করতে একটু দেরি হচ্ছে। তবে খুব শীঘ্রই চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের কমিটির ঘোষণা আসতে পারে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।